গৌতম বুদ্ধের জীবনী ও বাণী

 

গৌতম বুদ্ধের ( Buddha )


প্রাচীন ভারতে বর্তমানে নেপালের অন্তর্গত হিমালয়ের
পাদদেশে ছিল কোশল রাজ্য ।
শাক্যবংশের উপাধি ছিল গৌতম । শুদ্ধোধনের দুই স্ত্রী ছিলেন জ্যেষ্ঠা - মায়াদেবী , কনিষ্ঠা প্রজাপতি ।
সে কালের প্রচলিত রীতি অনুসারে সন্তান জন্মাবার সময় মহিলাদের তাদের বাপের বাড়িতে পাঠানো হত ।
সেইমতো যথাসময়ে পিতৃগৃহে যাত্রা করলেন মায়াদেবী । 
সেই উদ্যানেই ভগবান বুদ্ধ জন্মগ্রহণ করলেন ।
পুত্র জন্মাবার কয়েক দিন পরেই মায়াদেবী মারা গেলেন ।
শিশুপুত্রটির নাম রাখা হল সিদ্ধার্থ
সকলের ভালবাসা , স্নেহ , যত্নে , ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠতে লাগলেন শিশু সিদ্ধার্থ । যেমন তার অনিন্দ্যসুন্দর রূপ তেমনি শাস্ত ধীর নম্র তাঁর স্বভাব । রাজা শুদ্ধোধন জ্যোতিষীদের আদেশ করলেন শিশুটির ভাগ্য গণনা করতে ।
তাঁরা শিশু সিদ্ধার্থের ভাগ্য গণনা করে বললেন — এই শিশু একদিন পৃথিবীর রাজা হবেন । যেদিন জরাজীর্ণ বৃদ্ধ মানুষ , রোগগ্রস্ত মানুষ , মৃতদেহ এবং সন্ন্যাসীর দর্শন পাবে সেইদিনই সংসারের সকল মায়া ত্যাগ করে গৃহত্যাগী হবে । একথা শুনে রাজা শুদ্ধোধন খুবই চিন্তিত হয়ে পড়লেন । মন্ত্রীরা পরামর্শ দিলেন এই শিশুকে সুখ , বৈভব আর বিলাসিতার স্রোতে ভাসিয়ে দিন , তাহলে এ আর কোনোদিন গৃহত্যাগী সন্ন্যাসী হবে না । আলাদা একটি প্রাসাদেই স্থান হল রাজপুত্র সিদ্ধার্থর ।
যেখানে কোনো জরা , রোগ , মৃত্যুর প্রবেশ করবার অধিকার নেই ।
ধীরে ধীরে বড় হয়ে উঠলেন সিদ্ধার্থ । যৌবনে পা দিতেই রাজা শুদ্ধোধন তাঁর বিবাহের আয়োজন করলেন । সম্ভ্রান্তবংশীয় সুন্দরী কিশোরী যশোধরার সাথে সিদ্ধার্থর বিবাহ হল ।
বিবাহের পর কিছুদিন আনন্দ উৎসবে মেতে রইলেন সিদ্ধার্থ । যথাসময়ে তাদের একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হল ।
তার নাম রাখা হল রাহুল । সন্তানের জন্মের পর থেকেই সিদ্ধার্থের মধ্যে পরিবর্তন দেখা দিল ।
ছেলেবেলা থেকেই তিনি ছিলেন ধীর , শান্ত কিন্তু এবার হয়ে উঠলেন উদাসী আনমনা । সব সময় একা একা বসে কি যেন ভাবেন । একদিন পথে বার হয়েছেন , এমন সময় তাঁর চোখে পড়ল এক বৃদ্ধ অস্থিচর্মসার , মাথার সব চুলগুলো থেকে সাদা হয়ে গিয়েছে , মুখে একটিও দাঁত নেই । গায়ের চামড়া স্কুলে পড়েছে । লাঠিতে ভর দিয়ে ধীরে ধীরে হাঁটছিল ।
বৃদ্ধটিকে দেখামাত্রই রথ থামালেন সিদ্ধার্থ । তাঁর সমস্ত মন বিচলিত হয়ে পড়ল মানুষের একি ভয়ঙ্কর রূপ । সঙ্গে সঙ্গে সারথী চন্নকে জিজ্ঞাসা করলেন – এর এই অবস্থা হল কেমন করে ?
সারথী চন্ন তখন বলল , সকল মানুষকেই একদিন বৃদ্ধ হতে হবে , তখন তার শরীর থেকে যৌবনের সব রূপ - সৌন্দর্য হারিয়ে যাবে — জরা এসে তাকে গ্রাস করবে । এ হল মানুষের অবশ্যভাবী পরিণাম । ভারাক্রান্ত মনে প্রাসাদে ফিরে এলেন সিদ্ধার্থ ।
কয়েকদিন পর হঠাৎ সিদ্ধার্থর চোখে পড়ল একটি গাছেরতলায় শুয়ে আছে একজন মানুষ । অসুস্থ , রোগগ্রস্ত , যন্ত্রণায় আর্তনাদ এই দৃশ্য দেখে সিদ্ধার্থের অন্তর ব্যথিত হয়ে উঠল । তিনি জিজ্ঞাসা করলেন , চন্নু , ব্যাধির হাত থেকে কি মানুষের মুক্তি নেই ? চন্ন জবাব দিল , —যুবরাজ , এই ব্যাধি মানুষের স্বাভাবিক ঘটনা । এর হাত থেকে কোনো মানুষের মুক্তি নেই । একথা শুনে সিদ্ধার্থ বিমর্ষ হয়ে পড়লেন ।
তাহলে তো যৌবনেও সুখ নেই । যে কোনো মুহূর্তে ব্যাধি এসে সব সুখ কেড়ে নেবে । কিছুদিন পর সিদ্ধার্থর চোখে পড়ল রাজপথ দিয়ে চলেছে এক শবযাত্রা । জীবনে এই প্রথমবার মৃতদেহ দেখলেন — প্রিয়জনদের কান্নায় চারদিক ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছে ।
বিস্মিত হলেন সিদ্ধার্থ – কিসের জন্য এই কান্না ? চন্ন বলল , প্রত্যেক মানুষের জীবনের শেষ পরিণতি এই মৃত্যু । তাই প্রিয়জনকে চিরদিনের জন্য হারাবার বেদনায় সকলে কাঁদছে । আনমনা হয়ে গেলেন সিদ্ধার্থ ।
এক জিজ্ঞাসা জেগে উঠল তাঁর মনের মধ্যে , মৃত্যুই যদি জীবনের অন্তিম পরিণতি হয় তবে এই জীবনের সার্থকতা কোথায় ? শুধু কি ব্যাধি জরাকে ভোগ করার জন্যই এই জীবন ?
পৃথিবীর সব মানুষ ধ্বংস আর মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছে , এর থেকে কি কোনো মুক্তি নেই ?
জীবনের এই অনিত্য যন্ত্রণাকে মানুষ কি জয় করতে অক্ষম ? রাজপ্রাসাদের সুখ - ঐশ্বর্য -
কয়েকদিন পর হঠাৎ সিদ্ধার্থর চোখে পড়ল একটি গাছেরতলায় শুয়ে আছে একজন মানুষ । অসুস্থ , রোগগ্রস্ত , যন্ত্রণায় আর্তনাদ এই দৃশ্য দেখে সিদ্ধার্থের অন্তর ব্যথিত হয়ে উঠল । তিনি জিজ্ঞাসা করলেন , চন্নু , ব্যাধির হাত থেকে কি মানুষের মুক্তি নেই ? চন্ন জবাব দিল , —যুবরাজ , এই ব্যাধি মানুষের স্বাভাবিক ঘটনা । এর হাত থেকে কোনো মানুষের মুক্তি নেই । একথা শুনে সিদ্ধার্থ বিমর্ষ হয়ে পড়লেন ।
তাহলে তো যৌবনেও সুখ নেই । যে কোনো মুহূর্তে ব্যাধি এসে সব সুখ কেড়ে নেবে । কিছুদিন পর সিদ্ধার্থর চোখে পড়ল রাজপথ দিয়ে চলেছে এক শবযাত্রা । জীবনে এই প্রথমবার মৃতদেহ দেখলেন — প্রিয়জনদের কান্নায় চারদিক ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছে ।
বিস্মিত হলেন সিদ্ধার্থ – কিসের জন্য এই কান্না ? চন্ন বলল , প্রত্যেক মানুষের জীবনের শেষ পরিণতি এই মৃত্যু । তাই প্রিয়জনকে চিরদিনের জন্য হারাবার বেদনায় সকলে কাঁদছে । আনমনা হয়ে গেলেন সিদ্ধার্থ ।
এক জিজ্ঞাসা জেগে উঠল তাঁর মনের মধ্যে , মৃত্যুই যদি জীবনের অন্তিম পরিণতি হয় তবে এই জীবনের সার্থকতা কোথায় ? শুধু কি ব্যাধি জরাকে ভোগ করার জন্যই এই জীবন ?
পৃথিবীর সব মানুষ ধ্বংস আর মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছে , এর থেকে কি কোনো মুক্তি নেই ?
জীবনের এই অনিত্য যন্ত্রণাকে মানুষ কি জয় করতে অক্ষম ? রাজপ্রাসাদের সুখ - ঐশ্বর্য -
কয়েকদিন পর হঠাৎ সিদ্ধার্থর চোখে পড়ল একটি গাছেরতলায় শুয়ে আছে একজন মানুষ । অসুস্থ , রোগগ্রস্ত , যন্ত্রণায় আর্তনাদ এই দৃশ্য দেখে সিদ্ধার্থের অন্তর ব্যথিত হয়ে উঠল । তিনি জিজ্ঞাসা করলেন , চন্নু , ব্যাধির হাত থেকে কি মানুষের মুক্তি নেই ? চন্ন জবাব দিল , —যুবরাজ , এই ব্যাধি মানুষের স্বাভাবিক ঘটনা । এর হাত থেকে কোনো মানুষের মুক্তি নেই । একথা শুনে সিদ্ধার্থ বিমর্ষ হয়ে পড়লেন ।
তাহলে তো যৌবনেও সুখ নেই । যে কোনো মুহূর্তে ব্যাধি এসে সব সুখ কেড়ে নেবে । কিছুদিন পর সিদ্ধার্থর চোখে পড়ল রাজপথ দিয়ে চলেছে এক শবযাত্রা । জীবনে এই প্রথমবার মৃতদেহ দেখলেন — প্রিয়জনদের কান্নায় চারদিক ভারাক্রান্ত হয়ে উঠেছে ।
বিস্মিত হলেন সিদ্ধার্থ – কিসের জন্য এই কান্না ? চন্ন বলল , প্রত্যেক মানুষের জীবনের শেষ পরিণতি এই মৃত্যু । তাই প্রিয়জনকে চিরদিনের জন্য হারাবার বেদনায় সকলে কাঁদছে । আনমনা হয়ে গেলেন সিদ্ধার্থ ।
এক জিজ্ঞাসা জেগে উঠল তাঁর মনের মধ্যে , মৃত্যুই যদি জীবনের অন্তিম পরিণতি হয় তবে এই জীবনের সার্থকতা কোথায় ? শুধু কি ব্যাধি জরাকে ভোগ করার জন্যই এই জীবন ?
পৃথিবীর সব মানুষ ধ্বংস আর মৃত্যুর দিকে এগিয়ে চলেছে , এর থেকে কি কোনো মুক্তি নেই ?
জীবনের এই অনিত্য যন্ত্রণাকে মানুষ কি জয় করতে অক্ষম ? রাজপ্রাসাদের সুখ - ঐশ্বর্য - বিলাস সব তুচ্ছ হয়ে গেল সিদ্ধার্থর কাছে । স্ত্রী যশোধরার প্রস্ফুটিত যৌবন , পুত্র রাহুলের অনুপম সৌন্দর্য , নটীদের নৃত্য কোনো কিছুই আর তাঁর মনকে স্পর্শ করতে পারল না ।
প্রতি মুহূর্তে তাঁর মনে হল এই জরা , ব্যাধি মৃত্যুর হাত থেকে কে তাঁকে মুক্তির সন্ধান দেবে ?
হঠাৎ ই এক সন্ন্যাসীর সাথে তাঁর দেখা হল । পরনে গৈরিক বেশ , হাতে ভিক্ষাপাত্র ।
প্রতি মুহূর্তে তাঁর মনে হল এই জরা , ব্যাধি মৃত্যুর হাত থেকে কে তাঁকে মুক্তির সন্ধান দেবে ?
হঠাৎ ই এক সন্ন্যাসীর সাথে তাঁর দেখা হল । পরনে গৈরিক বেশ , হাতে ভিক্ষাপাত্র ।
প্রতি মুহূর্তে তাঁর মনে হল এই জরা , ব্যাধি মৃত্যুর হাত থেকে কে তাঁকে মুক্তির সন্ধান দেবে ?
হঠাৎ ই এক সন্ন্যাসীর সাথে তাঁর দেখা হল । পরনে গৈরিক বেশ , হাতে ভিক্ষাপাত্র ।
সন্ন্যাসী সিদ্ধার্থর এই প্রশ্নের উত্তরে বললেন , — আমি জেনেছি সংসারের সব কিছুই অনিত্য ।
জরা - ব্যাধি - মৃত্যু যে কোনো মুহূর্তে জীবনকে ধ্বংস করে দিতে পারে । তাই আমি যা কিছু অবিনশ্বর , চিরন্তন তারই সন্ধানে বার হয়েছি ।
আমার কাছে সুখ দুঃখ জীবন মৃত্যু সবই এক হয়ে গিয়েছে । সিদ্ধার্থ এবার সকলের কাছ থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে নিলেন । দিবারাত্রি এক চিন্তার মধ্যে হারিয়ে গেলেন — তবে এই জীবনের সুখ বিলাসের তো কোনো মূল্য নেই ।
জরা - ব্যাধি - মৃত্যুই তো জীবনের সব আনন্দকে স্নান করে দেবে । এর থেকে মুক্তির পথ , তাঁকে খুঁজে বার করতেই হবে । জয় করতে হবে এই ভয়ঙ্কর জরা - ব্যাধি - মৃত্যুকে । কিন্তু তিনি বুঝলেন এই প্রাসাদে থেকে তো তা করা সম্ভব নয় । এই সন্ন্যাসী তাঁকে সেই পথের ইঙ্গিত দিয়ে গিয়েছে ।
সকলের অগোচরে গভীর রাতে নিজের গৃহ ত্যাগ করে বেরিয়ে এলেন সিদ্ধার্থ । রেখে এলেন স্ত্রী যশোধরা , পুত্র রাহুল , পিতা শুদ্ধোধন , মাতা মহাপ্রজাপতিকে । অশ্বশালায় ঘুমিয়ে ছিল সারথী চন্ন । তাঁকে ডেকে তুললেন সিদ্ধার্থ । এই গভীর রাতে কোথায় যাবেন সিদ্ধার্থ ?
বিস্মিত হল চন্ন । কিন্তু যুবরাজকে তাঁর প্রশ্ন করবার কোনো অধিকার নেই ।
শুধু তাঁর আদেশ তাকে পালন করে যেতে হবে । সিদ্ধার্থকে চন্ন রথে নিয়ে চললেন । নগরের সীমানা পার হয়ে , জনপদ গ্রাম পার হয়ে , রাজ্যের সীমানায় এসে তাঁরা দাঁড়ালেন ।
এবার সারথী চন্নকে বিদায় দিতে হবে । নিজের সমস্ত অলঙ্কার , রাজবেশ খুলে সারথী চন্নকে উপহার হিসাবে দিয়ে দিলেন সিদ্ধার্থ ।
তারপর বললেন , তুমি পিতাকে বোলো আমি যদি কোনোদিন জরা , ব্যাধি— • মৃত্যুকে জয় করতে পারি তবে আবার তাঁর কাছে ফিরে আসব । আমি মানুষকে এই যন্ত্রণা থেকে মুক্ত করে আলোর পথ দেখাতে চাই । যুবরাজকে বিদায় দিয়ে অশ্রুসজল চোখে প্রাসাদে ফিরে গেল চন্ন । এবার সিদ্ধার্থ । সাধারণ বেশ পড়ে অরণ্যের রাস্তা ধরে এগিয়ে চললেন । জীবনে কোনোদিনও তিনি কঠিন পথে চলেননি । তাঁর পা দুটি ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায় । কিন্তু তবুও তাঁর কোনো ভূক্ষেপ নেই । তিনি কেবল চলতেই থাকেন । গাছের ফল খান , নদীর জল পান করেন , তৃণসজ্জায় ঘুমিয়ে পড়েন । আবার এগিয়ে চলেন । এইভাবে চলতে চলতে অবশেষে তিনি রাজগৃহে এসে পৌঁছলেন । তখন রাজগৃহ ছিল মগধের রাজা বিম্বিসারের রাজধানী ।
নগরের পূর্বপ্রাপ্তে ছিল পাঁচটি পাহাড় । সেখানে কোনো জনমানব নেই । চারিদিক নির্জন , শুধু পাখির কুজন আর বয়ে চলা বাতাসের শব্দ শোনা যাচ্ছে । জায়গাটা সিদ্ধার্থের ভাল লেগে গেল ।
তিনি ঠিক করে ফেললেন এখানেই বিশ্রাম করবেন ।
অদুরে গিয়ে বসলেন । আলাড়ার ধ্যান ভঙ্গ হওয়ার পর সিদ্ধার্থ তাঁর কাছে নিজের পরিচয় দিলেন এবং গৃহত্যাগের কারণ বর্ণনা করে বললেন , আমি মুক্তি পথের সন্ধান করছি । আপনি আমাকে বলে দিন কোন্ পথ ধরে অগ্রসর হলে আমি আমার লক্ষ্যে পৌঁছতে পারব । আলাড়া সিদ্ধার্থকে দেখে উপলিব্ধ করলেন এ কোনো সাধারণ রাজপুত্র নয় । এর মধ্যে রয়েছে এক ঐশ্বরিক শক্তি । তিনি বললেন প্রথমে তুমি শাস্ত্র পাঠ কর , সাধন ভজন কর , তারপর ধীরে ধীরে পরম শক্তিকে উপলব্ধি করতে পারবে । সিদ্ধার্থ সেখানে একটি গুহায় নিজের বাসস্থান করে নিলেন । সমস্ত দিন ধ্যান বেদপাঠ শাস্ত্রচর্চার মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত হয়ে যেত । সাধুরা ধর্মের যেসব ব্যাখ্যা করত একটিবার শোনা মাত্রই তা তিনি উপলব্ধি করতে পারতেন । আর কখনো তা বিস্মৃত হতেন না । মাঝে মাঝে ভিক্ষাপাত্র নিয়ে নগরে চলে যেতেন । নগরের মানুষ মুগ্ধ বিস্ময়ে দেখত এই তরুণ সন্ন্যাসীকে , কি দেবদুর্লভ রূপ । সমস্ত দেহ থেকে যেন এক প্রজ্বলিত শিখা বেরিয়ে আসছে । দিনের পর দিন ধরে গুরু আলাড়ার কাছে শিক্ষা পেয়ে অনেক কিছু জ্ঞানলাভ করেছেন সিদ্ধার্থ কিন্তু তাঁর অন্তরে যেন অতৃপ্তি রয়ে যায় । মনে হয় তিনি যার সন্ধান করতে পথে বার হয়েছেন তা এখনো অজানা রয়ে গেছে । এই শাস্ত্র পুঁথি এর মধ্যে জ্ঞান থাকলেও জীবনের কোনো সন্ধান নেই ।
গৌতম বুদ্ধ বাণী
১) ফোঁটা ফোঁটা জলেই কলসি পূর্ণ হয় । 
                   গৌতম বুদ্ধ   
                     Buddha 
            -গৌতম বুদ্ধ   
 
৩) সকল কুকাজ মানুষের মন থেকেই উদ্ভব হয় । যদি মনের উত্তরণ ঘটানো যায় , কুকাজ কি করে সম্ভব ? 
         -গৌতম বুদ্ধ   
           -গৌতম বুদ্ধ   
            -গৌতম বুদ্ধ   
          -গৌতম বুদ্ধ   
        গৌতম বুদ্ধের বাণী
 
এই রাজ্যের রাজধানী ছিল কপিলাবস্তু । কোশল রাজ্যের অধিপতি ছিলেন শাক্যবংশের রাজা শুদ্ধোধন ।
 গৌতম বুদ্ধের বাণী
 গৌতম বুদ্ধের বাণী
গৌতম বুদ্ধের বাণী

জীবনী


দুই জন ছিলেন সহোদর বোন । শুদ্ধোধনের সুখের সংসারে কোনো পুত্রসন্তান ছিল না । বিবাহের দীর্ঘদিন পর গর্ভবর্তী হলেন জ্যেষ্ঠা রানি মায়াদেবী ।

যেতে যেতে পথে লুম্বিনী উদ্যান পড়ল । সেখানে এসে পৌঁছতেই রানির প্রসব বেদনা উঠল । যাত্রা স্থগিত রেখে সকলে বাগানেই আশ্রয় নিলেন ।

যিনি সমস্ত মানবের কল্যাণের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন , তিনি রাজার পুত্র হয়েও কোনো রাজপ্রাসাদে জন্ম গ্রহণ করলেন না , মুক্ত প্রকৃতির মধ্যে নীল আকাশের নীচে আবির্ভূত হলেন ।

শিশুপুত্রের সমস্ত ভার নিজের হাতে তুলে নিলেন মাসী প্রজাপতি ।

সমস্ত দেহে অপরাপ লাবণ্য । জগতের কোন সুখ - মুখে যেন তাকে স্পর্শ । করতে পারেনি । সিদ্ধার্থ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন , কেন আপনি এই সন্ন্যাস গ্রহণ করেছেন ?

এই প্রান্তরে ঘুরতে ঘুরতে তাঁর চোখে পড়ল পাহাড়ের ছোট ছোট গুহায় ধ্যানমগ্ন হয়ে আছেন সব সাধুরা । একটি গুহার সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লেন সিদ্ধার্থ । সেই গুহায় আলাড়া নামে এক সাধু ধ্যানমগ্ন অবস্থায় ছিলেন । সিদ্ধার্থ ওহার

এবার নতুন শুরুর সন্ধানে বেরিয়ে সিদ্ধার্থ এলেন উদ্দালক নামে এক সাধুর সান্নিধ্যে ।

এরপর তিনি তাঁর কাছে দীক্ষা গ্রহণ করলেন । সেই একই জীবনচর্চা শাস্ত্র পাঠ - যজ্ঞ— এতে বাইরের আড়ম্বর থাকলেও অন্তরের কোনো স্পর্শ পাওয়া যায় না । তাছাড়া তিনি যার সন্ধানে গৃহত্যাগী হয়েছেন সে পথেরও সন্ধান জানা নেই উদ্দালকের । সিদ্ধার্থ উপলব্ধি করতে পারলেন , যে জ্ঞান , পরম সত্যের অন্বেষণ তিনি করছেন , কোনো সাধুই তার সন্ধান জানেন না । সাধনার যে স্তরে উত্তীর্ণ হলে এই উপলব্ধি প্রজ্ঞা অন্তরে জেগে ওঠে তা এদের কারোর মধ্যেই নেই ।

এই কথা ভেবে তিনি হতাশায় ভেঙে পড়লেন । তিনি অনুভব করলেন তাঁর পথের সন্ধান অপর কেউ তাঁকে দিতে পারবে না ।

অন্ধকারের মধ্যে থেকেই তাঁকে নিজেকেই আলোর দিশা খুঁজে বার করতে হবে । এরপর সিদ্ধার্থ ঘুরতে ঘুরতে এসে উপস্থিত হলেন উরুবেলা নামে এক নগরের প্রান্তে । যেখানে নিরঞ্জনা নদী , তার অদূরে গভীর বন । সেখানে পাঁচজন সাধু বহুদিন ধরে তপস্যা করছিলেন । সিদ্ধার্থের আসার কারণ জেনে তাঁরা তাঁকে বললেন তুমি তপস্যা কর । একমাত্র তপস্যার মধ্যে দিয়েই পরম সত্যকে উপলব্ধি করা সম্ভব হবে । উন্মোচন ঘটবে । এই তপস্যাই তোমাকে দেবে গভীর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা । এর ফলে তোমার আত্মশক্তির সিদ্ধার্থ জিজ্ঞাসা করলেন , –কেমন করে আমি তপস্যা করব ? সন্ন্যাসীরা বললেন , —কঠোর ইন্দ্রিয় সংযম আর কৃচ্ছসাধনার পথেই তোমাকে তপস্যা করতে হবে । সেই সাধুদের কথা শুনে সিদ্ধার্থ তাঁর তপস্যা শুরু করলেন । তিনি দিন - রাত্রি একই....................


২) আজ আমরা যা কিছু করি তা সবই আমাদের অতীতের ভাবনার পরিণতি । যদি কেউ অশুভ ভাবনা নিয়ে কোনো কথা বলে কিংবা কাজ করে , তা হলে দুঃখ তাকে অনুসরণ করে । যদি কেউ বিশুদ্ধ ভাবনা নিয়ে কথা বলে বা কাজ করে , সুখ তাকে অনুসরণ করে ছায়ার মতন ।


৪) অসৎ ও বিবেকহীন মানুষ বুনো পশুর থেকেও ভয়ংকর । কারণ বুনো পশুর কামড় দেহে জ্বালা ধরায় , অসৎ মানুষের কামড় জ্বালা ধরায় মনে । 


৫) সহস্ৰ ফাঁপা শব্দ অপেক্ষা গুটিকয় শব্দের মূল্য অনেক বেশি যদি তা হৃদয়ে শান্তি নিয়ে আসে । সকল জটিল বিষয়ে বিশৃঙ্খলা সহজাত , চেষ্টা করতে হবে দক্ষতার সঙ্গে । অতীত কিংবা ভবিষ্যতে ডুবে না থেকে মনঃসংযোগ করো বর্তমানে , বর্তমান মুহূর্তগুলিতে ।


৬) যারা প্রকৃত অর্থেই বেঁচেছে তারা মরতে ভয় পায় না । 


৭) যা পেয়েছ তাকে অতিরিক্ত মূল্য দিও না , কাউকে ঈর্ষা কোরো না । যে অপরকে ঈর্ষা করে সে মনে শান্তি পায় না । 


৮) ঘৃণা কখনও ঘৃণা দ্বারা ধ্বংস করা যায় না , কেবল ভালোবাসার দ্বারাই তা সম্ভব , ইহাই শাশ্বত নিয়ম ।

 


৯) যিনি ৫০ জনকে ভালোবাসেন তার দুঃখের সংখ্যা ৫০। যিনি কাউকে ভালোবাসেন না তার একটিও দুঃখ নেই । 

        গৌতম বুদ্ধের বাণী



১০) স্বাস্থ্য হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার , সন্তুষ্টি শ্রেষ্ঠ সম্পদ । বিশ্বস্ততা শ্রেষ্ঠ সম্পর্ক । 



১১) হৃদয়ে ক্রোধ ধারণের অর্থ এক টুকরো জ্বলন্ত কয়লা ছুঁড়ে ফেলার উদ্দেশ্যে মুঠোয় ধরে রাখা ; এটা তোমারই হাত যা পুড়ে যাচ্ছে । 



১২) আমরা যত বড়ো বড়ো কথা বলি বা পড়ি না কেন যদি সেই অনুসারে কাজ না করি সেগুলি সব অর্থহীন । 

গৌতম বুদ্ধের বাণী


১৩) যে কাজ সম্পাদিত হয়ে গেছে তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই ; যে কাজ এখনও বাকি এসো সেদিকে নজর দেওয়া যাক ।

গৌতম বুদ্ধের বাণী

 


১৪বিতর্কে যে মুহূর্তে আমরা ক্রোধের খপ্পরে পড়ে যাই ঠিক তখনই সত্য থেকে বিচ্যুত হই এবং ক্রমাগত নিজেদের দিকে এগিয়ে চলি । 


গৌতম বুদ্ধের বাণী



১৫) আকাশের নিজস্ব কোনো পুব কিংবা পশ্চিম নেই । মানুষই এই বিভেদ সৃষ্টি করে এবং তা সত্য বলে বিশ্বাস করে ।

গৌতম বুদ্ধের বাণী

 



১৬) মানুষের কোনো বন্ধু কিংবা শত্রু নয় , তার মনই তাকে সকল পাপের পথে প্রলোভিত করে ।


       গৌতম বুদ্ধের বাণী



 ১৭) হাজার যুদ্ধ জয়ের থেকেও নিজেকে জয় করা বেশি কঠিন । কারণ সে জয় সম্পূর্ণ তোমার , কারণ তা কোনো দেবতা কিংবা দৈত্য , স্বৰ্গ কিংবা নরক — কেউ তোমার থেকে কেড়ে নিতে পারে না । 

      গৌতম বুদ্ধের বাণী


১৮)গন্তব্যে পৌঁছানো অপেক্ষা সুন্দর ভ্রমণ কম উপভোগ্য নয় । 

         গৌতম বুদ্ধের বাণী



 ১৯) ঠিক যেমন একটি মোমবাতি আগুন ছাড়া জ্বলতে পারে না , আধ্যাত্মিক জীবন ছাড়া মানুষও তেমনি বাঁচতে পারে না ।

গৌতম বুদ্ধের বাণী

 


২০) যেভাবে পৃথিবী খুঁড়ে সম্পদ তুলে আনা হয় , তেমনি ভালো কাজের থেকে উঠে আসে পুণ্য এবং বিশুদ্ধ এবং প্রশান্ত হৃদয় থেকে আবির্ভূত হয় জ্ঞান । মানব জীবনের গোলকধাঁধাময় পথে নিরাপদে হাঁটতে প্রত্যেকেরই প্রয়োজন জ্ঞানের আলো ও পুণ্যের নির্দেশনা । 

গৌতম বুদ্ধের বাণী




২১) আমরা ছাড়া কেউই আমাদের রক্ষা করে না । কেউ না । আমাদের নিজেদের পথ নিজেদেরই হেঁটে পার হতে হয় । গৌতম বুদ্ধের বাণী




২২)শান্তি অন্তরে , একে বাইরে খোঁজা অর্থহীন ।

গৌতম বুদ্ধের বাণী





২৩) পা - কে তখনই পা বলে অনুভূত হয় যদি তা মাটি স্পর্শ করে । 

      গৌতম বুদ্ধের বাণী




২৪) Mind is everything , what we think we become .  গৌতম বুদ্ধের বাণী




২৫) যা আমরা সব থেকে ভালোভাবে জানি তাতে গুরুত্ব না দেওয়াই হল 

জীবনের চরম ব্যর্থতা ।

      গৌতম বুদ্ধের বাণী


২৬)জিহ্বা ধারালো তরবারির মতো ... এক বিন্দু রক্ত না ঝরিয়েও হত্যা করতে সক্ষম ।




২৭) আকাশে কোনো পথই নেই । সব পথ হৃদয়ে । 


গৌতম বুদ্ধের বাণী



২৮) অস্তিত্বের সব থেকে বড়ো রহস্য হল ভয়হীনতা । তোমার কী হবে এ কথা ভেবে কখনও ভীত হয়ো না , কারও ওপর নির্ভর কোরো না । যে মুহূর্তে তুমি সকল সাহায্যকে বাতিল করতে পারবে জেনো তুমি মুক্ত । 

গৌতম বুদ্ধের বাণী

 


২৯) জ্ঞানীরা তাদের বক্তব্যকে ভাবনা দ্বারা অলঙ্কৃত করেন , ছাঁকেন যেভাবে চালুনি দ্বারা শস্য ছাঁকা হয় । 

     গৌতম বুদ্ধের বাণী


৩০) সত্যের পথযাত্রায় মানুষ দুটি ভুল সাধারণত করে : প্রথমত , যাত্রা শুরু না করে ; দ্বিতীয়ত , মাঝপথে থেমে যায় । গৌতম বুদ্ধের বাণী


 


৩১)সৎ বা পুণ্যের বিশুদ্ধতা প্রমাণের জন্য অসৎ বা পাপের উপস্থিতি অতি প্রয়োজন ।


 


৩২) সন্দেহের মতন ভয়ংকর আর কিছুই হতে পারে না । সন্দেহ মানুষে মানুষে বিচ্ছেদ ডেকে আনে । এ এক এমনই বিষ যা বন্ধু কিংবা প্রিয়জনদের আলাদা করে দেয় । এমন এক কাঁটা যা সর্বদা খোঁচা দেয় , রক্ত ঝরায় ; এটা এমন এক তরবারি যা হত্যা করে । 

      গৌতম বুদ্ধের বাণী


৩৩) যারা সকল বিদ্বেষপূর্ণ ভাবনার ঊর্ধ্বে তারা নিশ্চিত ভাবেই শান্তি লাভ করেন ।

       গৌতম বুদ্ধের বাণী

  

৩৪) তিনটি জিনিস দীর্ঘক্ষণ লুকিয়ে থাকতে পারে না — সূর্য , চন্দ্র আর সত্য । 

        গৌতম বুদ্ধের বাণী

 

৩৫) অলসতা মৃত্যুর সহজ পথ , শ্রমই প্রকৃত জীবনের পথ ; বোকারা অলস , জ্ঞানী ব্যক্তিরা পরিশ্রমী । 


গৌতম বুদ্ধের বাণী


৩৬) সুস্বাস্থ্য উপভোগ , প্রকৃত পারিবারিক শান্তি প্রভৃতি লাভের জন্য প্রত্যেকেরই উচিত নিজের মনকে সংযত ও শৃঙ্খলাবদ্ধ করা । যদি কেউ তার মনকে সংযত করতে পারে সে মুক্তির পথ খুঁজে পায় , এবং যাবতীয় জ্ঞান ও পুণ্য স্বভাবতই তার কাছে আসে । 


গৌতম বুদ্ধের বাণী

৩৭) দেহকে সুস্থ রাখা প্রত্যেকেরই কর্তব্য ... অন্যথা আমরা কখনোই আমাদের মনকে বলিষ্ঠ ও স্বচ্ছ রাখতে পারব না ।

গৌতম বুদ্ধের বাণী

 

৩৮)নিঃস্বার্থ জীবনযাপনের জন্য , প্রাচুর্যের মাঝেও আমাদের কোনো কিছুকে নিজের বলে ভাবা উচিত নয় । 

গৌতম বুদ্ধের বাণী


৩৯)‘ ঐক্য ’ কথাটা কেবলমাত্র একাধিকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য । ঐক্য এবং ঐক্যের ধারণা সর্বদাই দুই বা ততোধিকের মধ্যে বিরাজমান । 





৪০) পুণ্যকে ভালোরা যতটা না ভালোবাসে দুষ্টেরা তার থেকে অনেক বেশি জ্বালাতন করে মারে । 



 

৪১) আমরা আমাদের ভাবনা দ্বারাই গঠিত এবং চালিত হই । যাদের মন নিঃস্বার্থ ভাবনায় আপ্লুত তারা যখন কথা বলেন , কাজ করেন মানুষকে আনন্দ দেন । আনন্দ তাদের ছায়ার মতন অনুসরণ করে । 





৪২) প্রত্যেক মানুষের অধিকার আছে, তার নিজের দুনিয়াকে স্বয়ং নিজে খোঁজার।”



৪৩) আমাদের ভাবনাচিন্তাই আমরা । সব কিছুই ভাবনা থেকে জন্ম নেয় । আমরা প্রত্যেকেই নিজেদের ভাবনায় নিজের নিজের পৃথিবী গড়ে নিই । 




৪৪) কথাবার্তায় আমরা যে সকল শব্দ ব্যবহার করি সেগুলি সুচিন্তিতভাবে চয়ন করা উচিত । কারণ লোকেরা তা শুনছে , ভালো কিংবা মন্দ , যেভাবেই হোক প্রভাবিত হচ্ছে ।



 

৪৫) সমগ্র ব্রহ্মাণ্ডের যে - কোনো প্রাণীর মতো তুমি নিজে , তোমার ভালোবাসা ও স্নেহ পাবার যোগ্য । 





৪৬) কারও ওপর নির্ভরতা নয় । নিজেই নিজের মুক্তির উপায় খুঁজে নাও । 




৪৭) স্বাস্থ্য ছাড়া জীবন নয় ; সেটা কেবল বিলাপ ও যন্ত্রণার অবস্থা — মৃত্যুরই এক প্রতিচ্ছবি । 



৪৮) তুমি তোমার ক্রোধের জন্য শান্তি পাবে না , ক্রোধের দ্বারাই শাস্তি পাবে ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ